ভিভো মোবাইল ফোন ইন বাংলাদেশ ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার

বর্তমানে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মাঝে অন্যতম জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হলো Vivo। আকর্ষণীয় ডিজাইন, উন্নত ক্যামেরা, এবং নির্ভরযোগ্য সার্ভিসের কারণে এটি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্রেতাদের জন্য ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকার বাজেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই বাজেটে ভালো মানের মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। আজকের আর্টিকেলে এই বাজেটের মধ্যে থাকা Vivo মোবাইলগুলোর বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হলো।

কেন Vivo মোবাইল বেছে নেবেন?

Vivo মোবাইলের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এর ক্যামেরা। সাধারণত Vivo ফোনগুলো ফটোগ্রাফি এবং ভিডিওগ্রাফির জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। পাশাপাশি এর আকর্ষণীয় ডিজাইন ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যাকআপ ক্রেতাদের মন জয় করে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বিস্তৃত সার্ভিস সেন্টার নেটওয়ার্ক থাকায় Vivo ফোন ব্যবহারেও নিশ্চিন্ত থাকা যায়।

১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকার মধ্যে জনপ্রিয় Vivo মডেলসমূহ

Vivo Y22

মূল্য: ১৬,৯৯০ টাকা
ফিচার:

• ৬.৫৬ ইঞ্চি HD+ ডিসপ্লে
  
  

• Mediatek Helio G85 প্রসেসর
  
  

• RAM: ৪GB, স্টোরেজ: ৬৪GB
  
  

• রিয়ার ক্যামেরা: ৫০MP + ২MP, সেলফি: ৮MP
  
  

• ব্যাটারি: ৫০০০ mAh, ১৮W চার্জিং
  
  

Vivo Y36
মূল্য: ১৯,৯৯০ টাকা
ফিচার:

• ৬.৬৪ ইঞ্চি FHD+ ডিসপ্লে
  
  

• Qualcomm Snapdragon 680 প্রসেসর
  
  

• RAM: ৮GB, স্টোরেজ: ১২৮GB
  
  

• রিয়ার ক্যামেরা: ৫০MP + ২MP, সেলফি: ১৬MP
  
  

• ব্যাটারি: ৫০০০ mAh, ৪৪W ফাস্ট চার্জিং
  
  

Vivo ফোনের ফিচার ও তুলনামূলক আলোচনা

ডিসপ্লে ও ডিজাইন

এই দামে Vivo ফোনগুলোতে বড় ডিসপ্লে দেওয়া হয়, যেখানে HD+ এবং FHD+ রেজুলেশন থাকে। ফোনের ডিজাইন স্লিম ও আকর্ষণীয়, যা তরুণদের বেশি আকর্ষণ করে।

ক্যামেরা স্পেসিফিকেশন ও পারফর্মেন্স

Vivo ফোনগুলো ক্যামেরা-কেন্দ্রিক হওয়ায় উচ্চ রেজুলেশনের প্রাইমারি ও সেলফি ক্যামেরা থাকে। দিনের আলোতে ছবির মান চমৎকার হয়, তবে কম আলোতে কিছুটা উন্নতির সুযোগ রয়েছে।

প্রসেসর, RAM ও স্টোরেজ

বাজেট অনুযায়ী, Vivo ফোনে Mediatek এবং Qualcomm প্রসেসর ব্যবহৃত হয়, যা মাঝারি ধরনের গেমিং এবং সাধারণ ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট। RAM ও স্টোরেজ সুবিধাজনক এবং পর্যাপ্ত থাকে।

ব্যাটারি ও চার্জিং প্রযুক্তি

Vivo ফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশ ভালো, বেশিরভাগ ফোনেই ৫০০০ mAh ব্যাটারি থাকে। দ্রুত চার্জিং প্রযুক্তিও এই বাজেটের ফোনে পাওয়া যায়।

বাংলাদেশে Vivo মোবাইলের সর্বশেষ দাম

বাংলাদেশের অনলাইন এবং অফলাইন মার্কেটে Vivo Y22 এর দাম ১৬,৯৯০ টাকা, Vivo Y 29 দাম ৩০০০০ টাকা এবং Vivo Y36 এর দাম ১৯,৯৯০ টাকা। Daraz, Pickaboo, এবং বসুন্ধরা সিটি মার্কেটে এই ফোনগুলো সহজে পাওয়া যায়।

• Vivo মোবাইলের সুবিধা

  1. স্টাইলিশ ডিজাইন:
     Vivo ফোনগুলো সাধারণত সুন্দর ও আকর্ষণীয় ডিজাইনের হয়ে থাকে, স্লিম ও হালকা।
     
     

  2. ভালো ক্যামেরা:
     বিশেষ করে সেলফি ক্যামেরা, AI ফিচার, নাইট মোড ইত্যাদিতে Vivo অনেক এগিয়ে।
     
     

  3. দাম তুলনামূলক কম:
     একই স্পেসিফিকেশনের অন্য ব্র্যান্ডের তুলনায় Vivo ফোনের দাম একটু কম হয়।
     
     

  4. ব্যাটারি লাইফ ভালো:
     অধিকাংশ Vivo ফোনে বড় ব্যাটারি ও ফাস্ট চার্জিং সুবিধা থাকে।
     
     

  5. UI (Funtouch OS):
     এটির কাস্টম ইউজার ইন্টারফেসে অনেক কাস্টোমাইজেশন অপশন পাওয়া যায়।
     
     

  6. গেমিং ও পারফরমেন্স:
     মিড-রেঞ্জ ও বাজেট সেগমেন্টেও ভালো পারফরমেন্স ও গেমিং অভিজ্ঞতা দেয়।
     
     

  7. ভালো সেলফি ফিচার:
     সেলফি ও ভিডিও কলের জন্য আলাদা ফিচার ও সেন্সর থাকে।
     
     

  Vivo মোবাইলের অসুবিধা

  1. ব্লোটওয়্যার (অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ):
     অনেক অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ প্রি-ইনস্টলড থাকে, যা রিমুভ করা যায় না।
     
     

  2. UI-তে বিজ্ঞাপন:
     অনেক Vivo ফোনের UI-তে বিজ্ঞাপন ও নোটিফিকেশন বেশি আসে।
     
     

  3. প্রসেসর ও পারফরমেন্স:
     কিছু বাজেট ও মিড-রেঞ্জ ফোনে কমদামী প্রসেসর দেওয়া হয়, যা হেভি গেমিং বা মাল্টিটাস্কিং-এ স্লো হতে পারে।
     
     

  4. নতুন আপডেট কম:
     সফটওয়্যার আপডেট নিয়মিত আসে না বা দেরিতে আসে।
     
     

  5. নেটওয়ার্ক/কাস্টমার সার্ভিস:
     কিছু ক্ষেত্রে সার্ভিস সেন্টার কম এবং সার্ভিস একটু স্লো।
     
     

  6. ডিউরেবিলিটি (স্থায়িত্ব):
     কিছু মডেলে প্লাস্টিক বডি থাকায় পড়ে গেলে সহজে স্ক্র্যাচ বা ক্ষতি হতে পারে।
     
     

  সংক্ষেপে—

  • কম বাজেটে ভালো ক্যামেরা, ডিজাইন ও ব্যাটারি চাওয়ার জন্য Vivo ভালো।
    
    

  • নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট, শক্তিশালী প্রসেসর ও কম ব্লোটওয়্যার চাইলে, কিছুটা খেয়াল রাখতে হবে।
    
    

ক্রেতার মতামত ও রিভিউ
বাংলাদেশের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ এবং ইউটিউব রিভিউ অনুসারে Vivo ফোনগুলোর ক্যামেরা এবং ডিজাইন নিয়ে গ্রাহকদের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তবে ভারী গেমিং করতে আগ্রহীরা মাঝে মধ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

ক্রয় করার আগে যা মনে রাখা জরুরি

ফোন কেনার আগে অবশ্যই অফিসিয়াল ওয়ারেন্টি এবং ফোনের আসলত্ব যাচাই করে নেওয়া উচিত। ফোনের বক্সে হেডফোন, চার্জার, ওয়ারেন্টি কার্ড ও ব্যবহার নির্দেশিকা অবশ্যই দেখে নিতে হবে।

উপসংহার

১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকার মধ্যে Vivo মোবাইল কেনার ক্ষেত্রে এটি একটি চমৎকার ব্র্যান্ড। এর ক্যামেরা, ব্যাটারি, ও ডিজাইনের দিক থেকে Vivo ফোনগুলো সত্যিই একটি আদর্শ পছন্দ। সঠিক মডেল বাছাই করলে ব্যবহারকারীরা দীর্ঘদিন নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন।